পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে এ সপ্তাহের ছুটির অবকাশে এসেছেন বছরের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক পর্যটক। সৈকতের জিরো পয়েন্টে তিল ধারনের ঠাঁই নাই।
পর্যটকের ভিড়ে দীর্ঘ ১৮ কিলোমিটার সৈকত এলাকা এখন মুখরিত। আগত পর্যটকরা সৈকতের নোনা জলে গা ভাসিয়ে আনন্দ উন্মাদনায় মেতেছেন। অনেকেই প্রিয়জনদের সাথে সেলফি তুলে ছড়িয়ে দিচ্ছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। কেউ সৈকতের বেঞ্চিতে বসে উপভোগ করছেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।
এদিকে সৈকতের গঙ্গামতি, কাউয়ারচর, ঝাউবাগান, শুটকি পল্লী, লেম্বুর চর, বৌদ্ধ বিহার, রাখাইন পল্লী ও ইলিশ পার্কসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্পটে পর্যটকের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। পর্যটকের এমন ভিড়ে বুকিং রয়েছে কুয়াকাটার সকল হোটেল মোটেল। পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ফিরে এসেছে প্রাণচাঞ্চল্য।
তবে আগত পর্যটকরা যেন স্বাস্থ্যবিধি মানতেই চাইছেন না। এ ব্যাপারে ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে বার বার সতর্কতামূলক মাইকিং করতে দেখা গেছে।
সৈকতের জিরো পয়েন্টে কথা হয় ঢাকার কাকরাইল থেকে আসা পর্যটক পঞ্চাশোর্ধ্ব আরেফিন রহমানের সঙ্গে।
আরেফিন রহমান বলেন, পরিবার পরিজন নিয়ে গতকাল বিকালে কুয়াকাটায় এসেছি। সকালে গঙ্গামতি এলাকায় সূর্য উদয়ের বিরল দৃশ্য দেখেছি যেটা আমাদের মুগ্ধ করেছে। আর সৈকতের জিরো পয়েন্টে শুধু মানুষ আর মানুষ। এতো মানুষ আমি একসঙ্গে কখনো দেখিনি।
খুলনা রুপসা এলাকা থেকে আসা অপর পর্যটক আমিন-সালেহা দম্পতি ঝাউবাগান এলাকায় বসে আছেন।
আমিন বলেন, এর আগেও একবার কুয়াকাটায় এসেছি। তখন সৈকত অনেক বড় ছিলো। ঝাউবাগানের পরিধি অনেকটা ছোট হয়ে গেছে। অনেক গাছ ভেঙে সৈকতে পরে আছে। এটা দেখতে তেমন ভালো লাগেনি। তবে সৈকতের পরিবেশটা বেশ ভালো লেগেছে। অনেক পর্যটক এক সঙ্গে যে যার মতো আনন্দ করছে, এটাও বেশ ভালো লেগেছে।
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটার (টোয়াক) সাধারণ সম্পাদক কেএম জহির বলেন, আজ গত দুই বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পর্যটকের আগমন ঘটেছে কুয়াকাটায়। সকল হোটেল মোটেল বুকিং রয়েছে। সিট না পেয়ে অনেক পর্যটক স্থানীয়দের বাসা বাড়িতে আশ্রয় নেওয়ার কথা শুনেছি। এভাবে পর্যটকের সংখ্যা বাড়তে থাকলে ব্যবসায়ীরা তাদের করোনাকালীন লোকসান পুষিয়ে নিতে পারবেন।
মহিপুর থানার ওসি আবুল খায়ের বলেন, প্রতিদিনই থানা পুলিশের একটি টিম পর্যটকদের নিরাপত্তায় কাজ করছে। যে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে থানা পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
কুয়াকাটা ট্যুরিষ্ট পুলিশ জোনের এএসপি আবদুল খালেক বলেন, পর্যটকদের স্বাস্থ্যবিধি মানাতে বার বার সৈকত এলাকায় সতর্কতামূলক মাইকিং করা হচ্ছে। আগতদের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় কুয়াকাটার সকল স্পটে ট্যুরিষ্ট পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।